বিশ্ববাজারে মিলিয়ন ডলারের পণ্য বাংলাদেশে ১০ টাকা!

মাসুম বিল্লাহঃ সম্প্রতি লালমনিরহাটের চাষিরা ১০ টাকা মণ মুলা বিক্রি করছে, বগুড়া – জয়পুরহাটের চাষিরা মাঝে মাঝে মুলা জমিতে পচিয়ে জৈব সার তৈরি করে থাকে কারণ বাজারে বিক্রি করে যাতায়াতের খরচটুকুও যোগানো সম্ভব হয় না।
এছাড়াও বাংলাদেশের আরো আরো অনেক যায়গায় মুলা আবাদ হচ্ছে কিন্তু চাষিরা মূল্য পাচ্ছে না।
অথচ ইন্ডিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও চীনের চাষিরা এই মুলাকে বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াজাত করে বিশ্ববাজারে লক্ষ লক্ষ ডলার বিক্রি করছে।
থাইল্যান্ডে মুলা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাবান তৈরি করা হয় যা বিশ্বের প্রায় ৫০ টি দেশে বিক্রি হচ্ছে।
চাইনিজ উদ্যোক্তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুলার বিভিন্নরকমের পাওডার বিক্রি করছে।
এছাড়াও বিভিন্ন দেশে মুলা থেকে কয়েক রকমের চিপস তৈরি হচ্ছে, মুলা কুচি কুচি করে কেটে শুকিয়ে সুপারশপ গুলোতে বিক্রি হচ্ছে, হারবাল কোম্পানিগুলো মুলার জুস বিক্রি করছে, বিভিন্ন ধরনের হজমী ড্রিংস তৈরি হচ্ছে, বিভিন্নধরনের বিউটি ক্রিম এবং লোশন তৈরি হচ্ছে।
৮০% মুলা দিয়ে তৈরী ২০০ গ্রাম ওজনের একটি স্কিন ক্রিম হাঙ্গেরিতে বিক্রি হচ্ছে ৪৮০০ টাকায়।
এগুলো ছাড়াও এমাজন, আলিবাবা সহ বিশ্বের অন্যান্য বড় বড় ই-কমার্সের সাইটে মুলা থেকে তৈরি শত শত পণ্য দেখা যায় যেগুলোর লক্ষ লক্ষ ডলারের বাজার মুল্য রয়েছে।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এসব পণ্য বাংলাদেশেও ইমপোর্ট হচ্ছে। আমাদের দেশে অনেক পরিমাণ মুলা নষ্ট হওয়া সত্বেও মুলার তৈরি বিভিন্ন পণ্য আমরা ইমপোর্ট করছি।
কিন্তু এখন সময় বাংলাদেশের, আমাদের দেশের উদ্যোক্তারা এরকম একেকটা পণ্য দিয়ে শত শত ব্র্যান্ড তৈরি করবে, বিভিন্ন দেশে এক্সপোর্ট করবে। হাজার হাজার উদ্যোক্তা এধরনের পণ্য নিয়ে কাজ করলেও পণ্যের ঘাটতি পরবে না, পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না।
পক্ষান্তরে আমাদের চাষিরা এবং উদ্যোক্তারা লাভবান হবে, বৈদেশিক মুদ্রা আসবে, জিডিপি বাড়বে, এভাবে খুব দ্রুত আমরা উন্নত বিশ্বে পরিণত হব। আমাদের দেশের নষ্ট হয়ে যাওয়া পণ্যগুলো নিয়ে কাজ করা এখন সময়ের দাবি। এরকম হাজারো পণ্য নিয়ে লক্ষ লক্ষ উদ্যোক্তার কাজের সুযোগ রয়েছে।
লেখক- প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, ওয়ার্ল্ড লিংকাপ- বাংলাদেশ।